অনলাইন জুয়ার ৩৩১টি ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক থেকে সম্প্রতি এগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সোমবার কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ ছাড়া গুগল অ্যাপ, ফেসবুক ও ইউটিউব লিংক বন্ধের জন্য রিপোর্ট করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ক্রেডিট বা ডেভিড কার্ড সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকে পড়েছে অনলাইন জুয়ার দিকে।
কয়েকটি অপরাধী চক্র এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার করছে।
কমিশনের ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা সেলের’ নিয়মিত নজরদারির অংশ হিসেবে সম্প্রতি এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
বিটিআরসি জানিয়েছে, গুগল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া বা বাজি-সংক্রান্ত ১৫০টি গুগল অ্যাপ বন্ধের জন্য রিপোর্ট করেছে বিটিআরসি।
ইতোমধ্যে গুগল কর্তৃপক্ষ প্লে স্টোর থেকে ১৪টি অ্যাপ বন্ধ করেছে এবং অবশিষ্ট অ্যাপ বন্ধ করার জন্য যাচাই-বাছাইসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে জুয়া খেলার ওয়েবসাইট ও গুগল অ্যাপের প্রচার এবং অনলাইন জুয়াসংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ায় এ ধরনের ২৭টি ফেসবুক লিংক এবং ৬৯টি ইউটিউব লিংক বন্ধের জন্যও রিপোর্ট করা হয়েছে।
এর অংশ হিসেবে ১৭টি ফেসবুক ও ১৭টি ইউটিউব লিংক বন্ধ করা হয়েছে এবং অবশিষ্ট লিংকগুলো বন্ধ করার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় কমিশন।
জুয়া খেলার মাধ্যমে অর্থ পাচারের সুযোগ তৈরি হওয়ার কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অ্যাপের নিয়ম অনুযায়ী খেলার চিপস কিনতে প্রয়োজন পড়ে নগদ অর্থ, ক্রেডিট বা ডেভিড কার্ড। এগুলোর মাধ্যমেই অপরাধী চক্র দেশ থেকে টাকা পাচার করে থাকে।
মোবাইল অ্যাপ ছাড়াও অপরাধীরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা ডোমেইনের মাধ্যমে সরাসরি অনলাইন গেম বা জুয়া খেলায় অংশগ্রহণ করে থাকে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
‘এ জন্য দেশে ও বিদেশে হোস্টকৃত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রথমে অ্যাকাউন্ট খুলে নিবন্ধন করা হয়, তারপর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য কার্ড বা অন্য কোনো মাধ্যমে জমা দিয়ে জুয়ায় অংশ নিতে হয়।’
অনলাইন জুয়াড়িরা বিকাশ, রকেট, নগদসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা আদান-প্রদান করে থাকে বলে জানায় কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রচলিত আইন অনুযায়ী দেশে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও সম্প্রতি বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও অ্যাপসের মাধ্যমে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস খেলাসহ বিভিন্ন লিগ ম্যাচ ঘিরে প্রতি মুহূর্তে অবৈধ অনলাইন জুয়া বা বাজি খেলা চলছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে প্রকাশ্যে এর হার কমলেও অনলাইনে এ খেলার প্রবণতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং এতে আসক্ত হচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা। রমরমা এ জুয়ায় নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন হাজারো মানুষ এবং তাঁদের পরিবার।
অনলাইনে জুয়া বা বাজির ওয়েবসাইটে বিটিআরসির এ পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।