বগুড়া জেলা পুলিশের তৎপরতায় নন্দীগ্রামের চাঞ্চল্যকর ইজিবাইকচালক মুকুল হোসেন (৩৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আন্তজেলা ছিনতাইকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে লুণ্ঠিত ইজিবাইক।
বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম, পিপিএম জানান, শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ও রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী, নাটোর ও বগুড়ার শেরপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামিরা হলেন বগুড়ার শেরপুর থানা এলাকার মো. এমদাদুল হক মিলন (৩৩) ও মো. আনোয়ার হোসেন (৩৫); নাটোরের গুরুদাসপুর থানা এলাকার মো. আ. জলিল ওরফে সবুজ (৩২), মো. আ. সোবহান (৪৬) ও মো. ঝান্টু ওরফে জন্টু ওরফে বেল্লাল (২৮) এবং রাজশাহীর চারঘাট থানা এলাকার মো. নাজিরুল ইসলাম (৪৪)।
পুলিশ সুপার জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে বগুড়ার নন্দীগ্রাম থানাধীন ভাটগ্রাম ইউনিয়নের চাকলমা গ্রামের একটি ফসলি জমি থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগীর নাম মুকুল হোসেন। তিনি পেশায় ইজিবাইকচালক। তাঁর বাড়ি বগুড়ার শাজাহানপুর থানা এলাকায়। তবে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে জেলার শেরপুর থানাধীন হাটদিঘী পুকুর এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। এ ঘটনায় নন্দীগ্রাম থানায় মামলা করেন মুকুলের স্ত্রী মোছা. মরিয়ম (৩৬)।
তদন্তের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আন্তজেলা ছিনতাইকারী চক্রের ছয় সদস্যকে শনাক্ত করা হয়। পরে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও নন্দীগ্রাম থানা-পুলিশ রাজশাহী, নাটোর ও বগুড়ার শেরপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার এবং লুণ্ঠিত ইজিবাইকটি উদ্ধার করে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ সুপার জানান, আসামিরা সংঘবদ্ধ আন্তজেলা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। এই চক্রের আনোয়ার ও মিলন ভুক্তভোগী মুকুলের বন্ধু। ঘটনার কয়েক দিন আগে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন আসামিরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ সেপ্টেম্বর শেরপুরের ধুনট মোড় এলাকায় ভুক্তভোগী মুকুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আনোয়ার ও মিলন। এক পর্যায়ে মুকুলুকে নারীসঙ্গের প্রস্তাব দেন তাঁরা। রাজি হলে মুকুলের ইজিবাইকে চড়ে খন্দকার টোলা মোড়ে যান তাঁরা। সেখান থেকে তিনটি যৌন উত্তেজক সিরাপ কেনেন। এরপর শুভগাছা বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে কৌশলে সিরাপের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে মুকুলকে পান করান।
কিছুক্ষণ পর মুকুল অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে চাকলমা বাজার এলাকায় নিয়ে যান আসামিরা। এক পর্যায়ে পাশের ফসলি জমিতে জমে থাকা পানিতে চুবিয়ে মুকুলকে হত্যা করেন। এরপর ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যান তাঁরা।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।