বগুড়ার শিবগঞ্জে চাঞ্চল্যকর হাফিজার রহমান গাছু (৭০) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত এক দম্পতিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৯ জানুয়ারি (শনিবার) নিজ কার্যালয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
হাফিজার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার চারজন হলেন গাইবান্ধা পলাশবাড়ীর মজনু মন্ডল (৩২), তাঁর স্ত্রী মাহমুদা বেগম (২৫), মজনুর জামাতা ও কালুবাড়ি এলাকার মো. মজনু (৩৬) ও বগুড়ার শিবগঞ্জের রহবল এলাকার সাইদুর মন্ডল ওরফে মগা (৩২)।
সংবাদ সম্মেলনে বগুড়ার পুলিশ সুপার জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার মেঘাখর্দ্দ দক্ষিণপাড়া এলাকার হাফিজারকে অচেতন অবস্থায় ডাকুমারা বাজার থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮ ডিসেম্বর ভোরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে নিহতের ছেলে আমিনুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, মামলার পর পুলিশ বিভিন্ন মাধ্যম অবলম্বন করে ২৭ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রহবল এলাকা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে সাইদুরকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রহবল দক্ষিণপাড়া এলাকার হাসান আলীর বাড়ি থেকে নিহতের চুরি যাওয়া ভ্যান উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর ২৮ জানুয়ারি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থেকে মজনু মন্ডল, তাঁর স্ত্রী মাহমুদা এবং বোন জামাই মজনুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার আরও জানান, ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টার দিকে মোকামতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে সোনাতলা বালুয়াহাটা যাওয়ার কথা বলে গাছুর ভ্যান ভাড়া করে মজনু ও মাহমুদা। যাওয়ার পথে ডাকুমারা বাসস্ট্যান্ড পৌঁছালে তাঁরা চা-পানের কথা বলে দাঁড়ায়। পরে কৌশলে মাহমুদা গাছুর চায়ের কাপে চেতনানাশক মিশিয়ে দেন। চা সেবন শেষে সবাই আবার গাছুর ভ্যানে করে সন্ধ্যায় ডাকুমারা থেকে বালুয়াহাটের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে ভ্যানচালক গাছু অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে ঘটনাস্থলে ফেলে মজনু মন্ডল, তাঁর স্ত্রী মাহমুদা ও ভগ্নিপতি মজনু গাছুর ভ্যানটি নিয়ে যান। পরে তাঁরা সাইদুলের কাছে ভ্যান বিক্রি করে দেন।