পুলিশ অফিসার সেজে প্রতারণার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থানা-পুলিশ।
থানা পুলিশ জানায়, ৫ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে নাগেশ্বরী থানার ডিউটি অফিসারের সরকারি মোবাইল ফোনে প্রতারক নিজেকে পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে থানার সার্বিক অবস্থা জানতে চান। তিনি থানায় কতটি অভিযোগ সকাল থেকে দায়ের করা হয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য চান। একপর্যায়ে অভিযোগকারীদের নাম এবং মোবাইল নম্বর জানতে চাইলে দায়িত্বরত এএসআই সরল বিশ্বাসে অভিযোগকারীর নাম ও মোবাইল নম্বর পুলিশ পরিচয়ধারী ব্যক্তিকে দেন।
একই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে একজন অভিযোগকারী নাগেশ্বরী থানার মুন্সির কাছে এসে বলেন, ‘ওসি স্যার ফোন করেছিল খরচের টাকার জন্য। একবার ২০০০ টাকা বিকাশ করলাম। আবার টাকা চাচ্ছে।’
বিষয়টি মুন্সির সন্দেহ হওয়ায় মুন্সি নম্বর সংগ্রহ করে যে নম্বর থেকে কল করা হয়েছিল, সে নম্বরে কল দিতে থাকেন। অপর প্রান্ত থেকে বারবার কল কেটে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে কল ব্যাক করে অফিসার ইনচার্জের মতো কণ্ঠে মুন্সিকে বলে, ‘এই মুন্সি বারবার কেটে দিচ্ছি, তবু কল দিচ্ছ কেন। রেখে দাও।’ কণ্ঠ শুনে মুন্সিও বিপাকে পড়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই অফিসার ইনচার্জ থানায় আসলে মুন্সি জিজ্ঞেস করে, ‘স্যার, আপনি আমার সঙ্গে কথা বললেন না?’ তখন অফিসার ইনচার্জ না বলেন এবং ঘটনা জানতে চান।
অফিসার ইনচার্জ তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি একটি অভিনব প্রতারণার ঘটনা বুঝতে পেরে ৫ নভেম্বর থানায় সব অভিযোগকারীর মোবাইল নম্বরে কল দিতে বলেন। তিনজন অভিযোগকারী একই ঘটনার বর্ণনা দেন। একইভাবে কল এবং একই বিকাশে টাকা দিয়েছেন মর্মে জানান। মোবাইল নম্বর এবং বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে নাগেশ্বরী থানা-পুলিশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামি নাগেশ্বরী বামনডাঙ্গা এলাকার মো. আতানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘প্রতারক চক্রটি অভিনব কৌশল অবলম্বন করে কয়েকজন সম্মানিত নাগরিকের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে নাগেশ্বরী থানা-পুলিশ প্রতারক চক্রটির হোতাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, এই বিষয়ে তদন্ত ও অভিযান চলমান রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকল সম্মানিত নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো যাচ্ছে। মামলা, জিডি বা অভিযোগের ক্ষেত্রে পুলিশকে কোনো প্রকার টাকা দিতে হয় না। কোনো প্রতারক চক্র টাকা দাবি করলে দ্রুত স্থানীয় থানায় জানানোর অনুরোধ করছি।’