চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) হালিশহর থানার অভিযানে পরকীয়া প্রেমের জেরে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। একই সঙ্গে হোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১০ ফেব্রুয়ারি হালিশহর থানাধীন রোজ উড হোটেলের ৮০২ নম্বর কক্ষে অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হালিশহর থানায় একটি নিয়মিত মামলা করা হয়।
মামলাটি তদন্তকালে রোজ উড হোটেলের রেজিস্টার, আসামি প্রদত্ত জাতীয় পরিচয়পত্র, বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ, হোটেল রুমে প্রাপ্ত আলামত পর্যালোচনা করা হয়। তদন্তের একপর্যায়ে ঘটনার হোতা আশরাফুল ইসলাম ওরফে সুজনকে (২৬) শনাক্ত করা হয়।
পরবর্তী সময়ে হালিশহর থানা-পুলিশ রোববার রাত ২টার দিকে ঢাকার আশুলিয়া থানা থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুজন ঘটনার সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
সুজন জানান, তিনি মা-বাবার সঙ্গে উত্তরায় নিজ বাড়িতে থেকে উত্তরা ল্যাবএইড হাসপাতালে রিপোর্ট ডেলিভারি সেকশনে চাকরি করতেন। ভুক্তভোগী তাঁর গ্রামের বাড়ির প্রতিবেশী।
ভুক্তভোগী তাঁর স্বামী ও তিন সন্তানের সঙ্গে বন্দর থানা এলাকার কলসী দিঘীর পাড়ে বসবাস করতেন। স্বামী বিভিন্ন কারণে সন্দেহ করায় ভুক্তভোগীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এর জেরে এক বছর ধরে ভুক্তভোগী নারী তার তিন সন্তান নিয়ে হালিশহরে বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।
একই এলাকার হওয়ার সুবাদে ভুক্তভোগীর সঙ্গে সুজনের পরিচয় হয় এবং দুই বছর ধরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি ভুক্তভোগীর সঙ্গে অন্য কোনো ব্যক্তির সম্পর্ক তৈরি হয়েছে ধারণা করে তাঁকে সন্দেহ শুরু করেন সুজন। এর জেরে ভুক্তভোগীর সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।
সুজন ভুক্তভোগীকে খুন করার পরিকল্পনা করতে থাকেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি ঘটনার দিন সকালে রোজ উড হোটেলে উপস্থিত হন। বিকেলে তিনি ভুক্তভোগীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে কক্ষে নেন এবং ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত পানীয় পান করতে দেন।
ভুক্তভোগী ঘুমের ওষুধমিশ্রিত পানীয় পান করার ফলে কিছুটা অচেতন হয়ে পড়েন। এর পরপরই তাঁকে ছুরি দিয়ে গলা ও পেটে আঘাত করে হত্যা করেন সুজন।
নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে উল্লেখিত ক্লুলেস মামলাটির রহস্য উদঘাটন হয়েছে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীর পরিচয় শনাক্ত করার পাশাপাশি হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। মামলাটির তদন্ত অব্যাহত আছে।