বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচটি জেলা নিয়ে ‘পদ্মা’ এবং বৃহত্তর কুমিল্লার তিনটি ও নোয়াখালীর তিনটি করে মোট ছয়টি জেলা নিয়ে ‘মেঘনা’ বিভাগ গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে।
রোববার (২৭ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব উঠলে তা অনুমোদন পায়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। খবর জাগো নিউজের।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে পদ্মা ও মেঘনা নামে নতুন দুই বিভাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। নিকার প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়নি। সভায় বাকি অ্যাজেন্ডাগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
নিকার সভায় কুষ্টিয়া জেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানাকে ঝাউদিয়া এলাকায় স্থানান্তর করে ‘ঝাউদিয়া থানা’ নামকরণ এবং ‘ঝাউদিয়া পুলিশ ক্যাম্প’কে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করে ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্প’ হিসেবে নামকরণের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া অনুমোদন পেয়েছে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় পৌরসভা গঠন, বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ও বোয়াইল ইউনিয়নের বিরোধপূর্ণ অংশ বিয়োজন করার সিদ্ধান্ত। এ এলাকা জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে সংযোজন করে মাদারগঞ্জ উপজেলার সীমানা পুনর্গঠন করা হবে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল পৌরসভার সীমানা সম্প্রসারণের প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে।
এর আগে গত ২ জুন নিকার বৈঠকের তারিখ নির্ধারিত ছিল। ওই বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ছিল ‘পদ্মা’ ও ‘মেঘনা’ বিভাগ গঠনের প্রস্তাব। কিন্তু পরে সেই বৈঠক স্থগিত হয়।
গত বছরের ২১ অক্টোবর ও ৭ ডিসেম্বর ‘মেঘনা’ নদীর নামে কুমিল্লা ও ‘পদ্মা’ নদীর নামে ফরিদপুর বিভাগ হবে বলে ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ‘ফরিদপুর’ ও ‘কুমিল্লা’ নামে বিভাগ গঠনের দাবি রয়েছে।
গত বছরের ২১ অক্টোবর কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভাগের বিষয়ে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দুটি নদীর নামে দুটি বিভাগ বানাব। একটা পদ্মা অন্যটা মেঘনা।
এ সময় কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার দাবি জানান কুমিল্লা নামে বিভাগ দেওয়ার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এর বিরোধিতা করেন। বলেন, ‘কু’ নাম দেব না। কুমিল্লা নামের সঙ্গে মোশতাকের নাম জড়িত।
শেষে দেশের দুই প্রধান নদীর নামে নতুন দুই বিভাগের নাম নির্ধারণ করে প্রস্তাব চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, যা এখন স্থগিত হলো।
বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলার মধ্যে রয়েছে ফরিদপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর। অন্যদিকে বৃহত্তর কুমিল্লার তিনটি জেলা কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর এবং বৃহত্তর নোয়াখালীর তিন জেলা নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর।