ঢাকার কেরানীগঞ্জে জঙ্গল থেকে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক নারীর (৩৭) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার আসামির নাম মো. শহিদুল ইসলাম (৩৮)।
ঢাকা জেলা পুলিশ জানায়, ১১ জুন (রোববার) রাত ৮টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইন নম্বর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশ স্থানীয় পরিত্যক্ত একটি জমির জঙ্গল থেকে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক নারীর লাশ উদ্ধার করে। লাশের গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিল। এ ঘটনায় ১২ জুন (সোমবার) পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করে।
লাশ উদ্ধারের পরই তদন্তে নামে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার একটি চৌকস দল। সিআইডির সহযোগিতায় অজ্ঞাতপরিচয় নারীর আঙুলের ছাপ থেকে তাঁর পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় একটি আভিযানিক দল ১২ জুন দিবাগত মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার পশ্চিম মাসদাইর থেকে আসামি শহিদুলকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি জানিয়েছেন, ওই নারীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার এক দিন আগে ওই নারী বরিশালে শহিদুলের গ্রামের বাড়ি যান এবং জানতে পারেন, শহিদুল বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী বরিশালে গ্রামের বাড়িতেই থাকেন। এ তথ্য জানার পর ওই নারী শহিদুলকে ফোন করে তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাঁকে বিয়ে করতে চাপ দেন। এরপর শহিদুল ওই নারীকে কৌশলে ঢাকায় আসতে বলেন। ঢাকায় আসার পর শহিদুল তাঁর সঙ্গে ঘটনার দিন বিকেল ৫টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা করেন। রাত ১০টার পর ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ওই নারীকে কেরানীগঞ্জে নিয়ে যান শহিদুল। এরপর ঘটনাস্থলে নিয়ে প্রথমে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন শহিদুল। পরে তাঁর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। মরদেহ যাতে শনাক্ত করা না যায়, সে জন্য পাশে থাকা ইটের টুকরা দিয়ে ওই নারীর মুখ থেঁতলে চেহারা বিকৃত করে শহিদুল পালিয়ে যান। হত্যাকাণ্ডের পর শহিদুল বারবার অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশ।