নাটোরের নলডাঙ্গা থানার পুলিশ চাঞ্চল্যকর হিমেল হত্যার ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ধার করেছে হত্যার কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র।
নলডাঙ্গা থানায় ২৯ মার্চ মো. ওমর ফারুক (৫৪) নামের এক ব্যক্তি হাজির হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে লিখিতভাবে এজাহার দাখিল করেন যে, তাঁর ছেলে মো. ফারহান জাহি হিমেল (১৫) ২৮ মার্চ বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৩টায় প্রতিদিনের মতো ঘোরাফেরা করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরেও ছেলে বাড়িতে না ফেরায় তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ফোন বন্ধ পায়।
স্থানীয়ভাবে অনেক খোঁজাখুঁজি করে হিমেলকে না পেয়ে তিনি সন্দেহ করেন, অজ্ঞাতনামা আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে তাঁর ছেলেকে হত্যা করে মৃতদেহ গোপন করে রেখেছে।
ওমর ফারুকের লিখিত এজাহারের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা দায়ের করা হয়।
বিষয়টি অবগত হওয়ার সাথে সাথে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (প্রশাসন ও অর্থ) সার্বিক দিক-নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, নাটোর সার্কেলের তত্ত্বাবধানে নলডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে চৌকস একটি টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত মো. শরিফুল ইসলাম সুজনকে (১৮) তাঁর নিজ বাড়ি থেকে ২৮ মার্চ রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার সময় গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শরিফুল ইসলাম সুজন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। তাঁর হেফাজত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়।
শরিফুল ইসলাম সুজনের দেখানো মতে ২৯ মার্চ রাতে নলডাঙ্গা থানাধীন ৪ নং পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পেছনে পরিত্যক্ত ভবন হতে ভিকটিম ফারহান জাহি হিমেলের রক্তমাখা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
নলডাঙ্গা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল ও তাঁর পাশ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি লোহার দা, রক্তমাখা গামছা, রশি ও পলিথিন, ভিকটিমের ব্যবহৃত একটি স্যামসাং বাটন মোবাইল ফোন, একটি দুরন্ত বাইসাইকেল উদ্ধার করে।
ঘটনার সাথে জড়িত আরও দুই আসামি শ্রী সজল সাহা পার্থ (১৮) ও মো. শিমুল ইসলামকে (১৮) তাঁদের বসতবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে ও তাঁদের ব্যবহৃত ২টি স্মার্টফোন উদ্ধার করে এবং জড়িত মো. মেহেদী হাসানকে (১৭) নলডাঙ্গা থানা-পুলিশ হেফাজতে গ্রহণ করে। মূলত মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া যায়। ঘটনার সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে।