দিনাজপুরের চিরিরবন্দর থানার পুলিশ কিশোর মিরাজ হত্যা মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত ১৪ মার্চ রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার সময় স্থানীয় লোকজন অফিসার ইনচার্জ চিরিরবন্দর থানাকে খবর দেয় যে ১২ নং আলোকডিহি ইউপির ২ নং ওয়ার্ডভুক্ত গছাহার(আজিত মাষ্টারপাড়া) গ্রামের পূর্ব দিকে পায়ে হাটার রাস্তার ওপর ১৪/১৫ বছর বয়সী কিশোরের গলাকাটা লাশ পড়ে আছে। লাশটি চিরিরবন্দর থানার নশরতপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে মিরাজের বলে শনাক্ত করা হয়।
এরপর নিহত মিরাজের বাবা মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ১৫ মার্চ চিরিরবন্দর থানার মামলা দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে থানার এসআই(নিঃ) মো. জাহাঙ্গীর বাদশা রনিকে তদন্তকারী অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনা এবং অফিসার ইনচার্জ চিরিরবন্দর থানা, পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত), তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ টিম চিরিরবন্দরের অফিসার ফোর্স ওই হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন এবং জড়িতদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু করে। রাতভর অভিযান পরিচালনা করে ১৬ মার্চ সকাল অনুমান ১১টার সময় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এ মামলার মূল পরিকল্পনাকারী মো. আসিফ ইসলাম(১৬) এবং হত্যাকাণ্ডে
অংশগ্রহনকারী মো. লিটন ইসলামকে(১৬) গ্রেপ্তার করে।
উভয়ের স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী নিহত মিরাজের ব্যাবহৃত অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, আসামির পরিহিত রক্তমাখা কাপড় চোপড় জনৈক সুমান্ত সরকারের ভুট্টা ক্ষেত থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছোরা রক্তমাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ধৃত আসামিদের বর্ণনা মতে নিহত মিরাজ এবং তারা খুব ভাল বন্ধু ছিল এবং একই সাথে চলাফেরা করত। প্রায় ১ বছর আগে মিরাজ আসামী আসিফ ইসলামের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ধার করে। এ নিয়ে মনোমালিন্য শুরু হয় এবং পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৪ মার্চ রাত ৯টার সময় আসামী আসিফ তার ব্যাবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে মিরাজকে কৌশলে ডেকে নিয়ে তার বাইসাইকেল যোগে তিনজন ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা করে। এরপর নির্জন সাথানে নিয়ে তাকালাম কেটে খুন করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে হত্যাকাণ্ডে ব্যাবহৃত ছোরাটি পাশের ভূট্টা ক্ষেতে ছুড়ে মারে এবং ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
তারা পরনের কাপড় চোপড় খুলে খালি গায়ে গ্রামের পথটুকু পার হয় এবং বাড়ির পাশে ময়লার স্তুপে ফেলে দেয়। নিহত মিরাজের মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে আসিফ ইসলাম তার বসতবাড়িতে রেখে দেয়।