তুরাগে ঢাবি ছাত্রী অপহরণ ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিদেশি পিস্তলসহ ৪ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. শাকিল আহম্মেদ রুবেল, মো. আকাশ শেখ, দেলোয়ার হোসেন ও মো. হাবিবুর রহমান।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে ডিবি উত্তরা জোনাল টিম।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি গুলি, ১টি ম্যাগাজিন, ১টি ওয়্যারলেস সেট, ২টি পুলিশ স্টিকারযুক্ত মোটরসাইকেল ও ছিনতাই করা ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আজ রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি জানান, গত ২৫ আগস্ট দুপুরে ঢাবির গাড়ি থেকে এক ছাত্রী মিরপুর বাসায় যাওয়ার জন্য কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে নামেন। কিছুদূর যাওয়ার পর শাহি মসজিদের সামনে এলে অপরিচিত মোটরসাইকেলচালক পুলিশ পরিচয়ে তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দিয়াবাড়ির নির্জন এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে ছুরির ভয় দেখিয়ে তাঁর গলার চেইন, কানের দুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাগজপত্র নিয়ে যান। এ ঘটনায় ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন তুরাগ থানায় একটি মামলা হয়।
গোয়েন্দা প্রধান বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই থানা-পুলিশের পাশাপাশি ডিবির উত্তরা বিভাগের ডিসি শফিকুল আলমের নির্দেশনায় একটি টিম কাজ শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অপরাধের কৌশল সম্পর্কে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মো. শাকিল আহম্মেদ ওরফে রুবেল ছিনতাই করা মোটরসাইকেলে পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে ওয়্যারলেস সেট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্রীদের টার্গেট করেন। একাকী পেয়ে কাছে অবৈধ মাদক আছে বলে তাঁকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নির্জন কোথাও নিয়ে যায়। এরপর তাঁর কাছে থাকা দামি জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন এবং অশালীন আচরণ করে। এটা তার পেশা ও নেশা হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত সে ১৫০০ এর বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা এবং ৫০টির বেশি অশালীন আচরণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। তার নামে ছয়টি দস্যুতার মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
গ্রেপ্তার বাকি তিনজন তার এই কাজে সহায়তা করে থাকেন।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ডিএমপির আদাবর থানায় অস্ত্র আইনে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তাদের রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের সকল সহযোগীকে আইনের আওতায় আনা হবে।
ডিএমপির গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী শফিকুল আলম বিপিএম (সেবা)-এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আছমা আরা জাহানের তত্ত্বাবধানে উত্তরা জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বদরুজ্জামান জিল্লুর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।