ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-গুলশান বিভাগ বিশেষ অভিযান চালিয়ে রাজধানীর খিলক্ষেত, ডেমরা ও গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে দেশীয় অস্ত্র, পুলিশের সরঞ্জামসহ ভুয়া ডিবি পরিচয়ে অপহরণ ও ডাকাত দলের ১৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। খবর ডিএমপি নিউজের।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. শহিদুল ইসলাম মাঝি ওরফে শহীদ মাঝি, সাগর চন্দ্র মালি, শাহ আলম হাওলাদার, মো. কামরুল ইসলাম ওরফে রমিজ তালুকদার, মো. মাকসুদুল মোমিন ওরফে শামীম, মো. হাসান, মো. নুরুল ইসলাম, মো. খলিলুর রহমান, মো. আকরাম হোসেন, মো. দ্বীন ইসলাম ওরফে কাউছার আহম্মেদ, মো. ইলিয়াছ আহম্মেদ ওরফে নিরব, মো. ফরহাদ আলী, মো. রিয়াজ হোসেন হাওলাদার ওরফে রিয়াজুল, মো. শফিকুল ইসলাম লিটন, মো. সেরাজুল ইসলাম ও মো. জহিরুল ইসলাম পিন্টু।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, গত ১৭ জুন ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস বিকাশের এজেন্ট আব্দুল আজিজের কাছ থেকে সর্বস্ব নিয়ে নির্জন স্থানে তাঁকে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় গত ২৪ জুন রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন আব্দুল আজিজ।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, গোয়েন্দা-গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম মামলাটির ছায়া তদন্ত করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ ও ছিনতাইয়ে জড়িত দলটিকে শনাক্ত করা হয়। পরে ১০ জুলাই গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার মৌচাক এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের মূল হোতা মো. শহিদুল ইসলাম মাঝি ওরফে শহীদ মাঝিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাঁর দেওয়া তথ্যমতে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে সাগর চন্দ্র মালি, শাহ আলম হাওলাদার, মো. কামরুল ইসলাম রমিজ তালুকদার, মো. মাকসুদুল মোমিন ওরফে শামীম, মো. হাসান ও মো. নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, একই দিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে খিলক্ষেত থানার ৩০০ ফুট রোডে অস্ট্রেলিয়ান স্কুলের সামনে থেকে আরও ৯ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৩০টি মোবাইল ফোন, ১টি মাইক্রোবাস, ডিবির জ্যাকেট, হ্যান্ডকাফ ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় পৃথক মামলা হয়েছে।
প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পারস্পরিক যোগসাজশে ঢাকার মতিঝিল, পল্টন, ধানমন্ডি ও গুলশান এলাকার ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে কোনো ব্যক্তি টাকা নিয়ে বের হওয়ার সময় তাঁদের টার্গেট করে। পরে ২/৩ জন মোটরসাইকেল নিয়ে তাঁদের পিছু নেয়। পথে সুবিধাজনক স্থানে মাইক্রোবাস নিয়ে তাঁদের দলের অন্য সদস্যরা প্রস্তুত থাকে। তারা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে তাদের মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেয়। পরে ভিকটিমের কাছ থেকে সর্বস্ব নিয়ে নির্জন স্থানে ফেলে রেখে যায়।
ডাকাত দলের গ্রেপ্তার এই ১৬ সদস্যের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।