জয়পুরহাটে অভিযান চালিয়ে কিডনি কেনাবেচা চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। জয়পুরহাটের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার সাতজনের নাম মো. সাহারুল (৩৮), মো. ফরহাদ হোসেন ওরফে চপল (৩১), মোশাররফ হোসেন (৫৪), মো. শাহারুল ইসলাম (৩৫), মো. মোকাররম (৫৪), মো. সাইদুল ফকির (৪৫) ও মোঃ সাদ্দাম হোসেন (৪০)।
জেলা পুলিশ জানায়, জয়পুরহাটের কালাই থানা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অসহায় ও দরিদ্র লোকজনের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্র মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি বিক্রিতি প্রলুব্ধ করে আসছিল। দালাল চক্র প্রাথমিক অবস্থায় ভুক্তভোগীদের ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা ধার বা সুদের ওপর ধার দেয়। কিছুদিন পরে পরিকল্পনা মোতাবেক টাকা ফেরত চায় এবং টাকা ফেরত দিতে না পারলে কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে সংঘবদ্ধ চক্র কয়েকজন অসাধু চিকিৎসকের মাধ্যমে দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে কিডনি অপসারণ করায়। এরপর ভুক্তভোগীদের হাতে এক থেকে দুই লাখ টাকা ধরিয়ে দিত এই চক্র।
এই দালাল চক্র সনাক্ত করতে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে কালাই থানা এলাকা থেকে কয়েকজন লোক নিখোঁজ হয়েছে। বর্তমানে তারা কালাই এলাকার কিডনি চক্রের প্রধান দালাল কাওছার ও সাত্তারের মাধ্যমে দুবাই ও ভারতে অবস্থান করছেন। পাঁচবিবি থানা এলাকাতেও কিডনি বিক্রির জন্য অসহায় দরিদ্র লোকজনকে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া যায়। কিডনি দালাল চক্রকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে ডিবির একটি দল কালাই থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দালাল চক্রের প্রধান কাওছার ও সাত্তারের সহযোগী সাহারুল, ফরহাদ, মোশাররফ, শাহারুল, মোকাররম ও সাইদুলকে এবং পাঁচবিবি এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করেছে।
জেলা পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তার সাতজনের মধ্যে মোশাররফ ২০০৯ সালে, শাহারুল ২০০৯ সালে, মোকাররম ২০০৬ সালে, সাইদুল ২০১৬ সালে তাদের কিডনি বিক্রি করেছেন। ফরহাদ, সাদ্দাম ও শাহারুল কিডনি বিক্রির জন্য ভারতে গেলেও তাঁরা কৌশলে পালিয়ে এসেছেন। পরবর্তীতে তাঁরা কিডনি কেনাবেচা চক্রে জড়িত হয়েছেন। গ্রেপ্তার আসামিদের কালাই থানায় ১৪ মে (শনিবার) সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা হয়েছে।