ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উদ্যোগে জাপানের আদলে ঢাকায় স্থাপন করা হবে চিলড্রেনস ট্রাফিক পার্ক। নতুন প্রজন্মকে শৈশব থেকে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হাতে-কলমে শেখানো হবে সড়কে চলাচলের নিয়ম। চিলড্রেনস ট্রাফিক পার্কে শিশুদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হবে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জাইকার যৌথ উদ্যোগে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে গৃহীত উদ্যোগ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
এস এম মেহেদী হাসান বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনারের নেতৃত্বে নাগরিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা এরই মধ্যে রাজধানীর ট্রাফিক সমস্যা সমাধানে নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।’
তিনি বলেন, উন্নয়ন সহযোগী জাইকা ডিএমপির সঙ্গে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে দুই বছর ধরে জাইকা ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান, ডেটা সংগ্রহ ও অ্যানালাইসিস নিয়ে কাজ করছে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা হচ্ছে সামগ্রিকভাবে সবার মধ্যে ট্রাফিক সচেতনতা বাড়ানো এবং সড়ক নিরাপত্তা ও রাস্তা ব্যবহারে ট্রাফিক আইনের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানো। জাইকা এ বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মডেল হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। জাপান সরকার ১৯৬০ সাল থেকে এ কাজগুলো করে যাচ্ছে। জনসচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে একেবারে শৈশব থেকে শুরু করতে যাচ্ছি। জাইকা ও ডিএমপির যৌথ উদ্যোগে বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে কাজ করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে শিশুরা যেন ছোটবেলা থেকেই ট্রাফিক আইন মানা এবং রাস্তায় কীভাবে চলতে হয়, এই বিষয়গুলোর ওপর হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিতে পারে; সে জন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থানে চিলড্রেনস ট্রাফিক পার্ক তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, ‘জাইকার সহযোগিতায় ডেটা অ্যানালাইসিসের ক্ষেত্রে বিশেষ করে যানজট কোথায় হচ্ছে, কোথায় দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে, এই হটস্পটগুলো নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যারের মাধ্যমে ডেটা সংগ্রহ করে সেগুলো অ্যানালাইসিস করে সমাধানে গুরুত্ব দিচ্ছি।’
উল্লেখ্য, এরই মধ্যে জাইকার ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্টের (ডিআরএসপি) আওতায় ডিএমপির ১৩ জন কর্মকর্তা জাপানে ‘ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গাড়িচালক, পথচারী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ট্রাফিক আইন ও শৃঙ্খলার বিষয়ে সচেতন করে তুলতে রাস্তার পাশেই ছোট ছোট আকারে ‘ট্রাফিক এডুকেশন রিসার্চ সেন্টার’ গড়ে তোলা হবে। এরই মধ্যে মোহাম্মদপুরে একটি ট্রাফিক এডুকেশন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, সেখানে পথচারী থেকে শুরু করে গাড়িচালকদের ৩০ থেকে ৪৫ মিনিটের সেশনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ট্রাফিক সিগন্যাল অটোমেশনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। অচিরেই ট্রাফিক সিগন্যাল অটোমেশনের কাজ শুরু হবে।