নওগাঁর সাপাহারে বিশেষ অভিযানে ডাকাত দলের দুই সদস্যকে আটক করেছে সাপাহার থানা-পুলিশ।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে এই অভিযান চালানো হয়।
সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারেকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটক ডাকাত দলের দুই সদস্য হলেন আলম (৪৫), তিনি সাপাহার উপজেলার ধবলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। পালাশ (৪০), তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মশরীভোজা গ্রামের বাসিন্দা।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
ওসি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে সাপাহার উপজেলা সদর পালপাড়ার ওষুধ ব্যবসায়ী অনিক নিজের দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন।
বাড়ির কাছে পৌঁছলে একদল ডাকাত অনিকের পথরোধ করে। ডাকাতদের হাতে থাকা হাঁসুয়া দিয়ে তাঁর শরীরে আঘাত শুরু করলে তিনি চিৎকার করেন। এরপর লোকজন বেরিয়ে এলে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন অনিককে দ্রুত চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান এবং বিষয়টি সাপাহার থানাকে অবহিত করেন।
খবর পেয়ে ওসি তারেকুর রহমান ও ওসি (তদন্ত) আল মাহমুদ ফোর্স নিয়ে গোপনে বিশেষ অভিযানে বের হন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, রাত ৩টার দিকে পুলিশ জানতে পারে, ডাকাত দলের সদস্যরা উপজেলার উচাডাঙ্গা গ্রাম থেকে একটি গরু ও একটি বাইসাইকেল নিয়ে ভটভটিতে উঠিয়ে পালানোর চেষ্টা করছে। এরপর পিকআপ ভ্যান দিয়ে তাদের ভটভটির পথরোধ করে টহলরত পুলিশ। এতে পুলিশের পিকআপের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভটভটি উল্টে যায়।
এরপর ভটভটিতে থাকা ডাকাত দলের সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের পিছু ধাওয়া করে। এ সময় ভটভটির আঘাতে আহত ডাকাত পলাশকে ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র ১টি, হাঁসুয়া ১টি, শাবল ও ১টি সুচালু লোহার রডসহ আটক করা হয়।
পায়ে আঘাত পেয়ে আরেক ডাকাত আলম দৌড়ে তাজপুর গ্রামের একটি পুকুরে ঝাঁপ দেয়। এ সময় পানি থেকে তাকে তুলতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ কয়েকটি গুলি ছোড়ে। গুলির শব্দে তাজপুর গ্রামবাসী জেগে ওঠেন।
এরপর সাধারণ লোকজন ও পুলিশ সদস্যরা পুরো পুকুর ঘিরে ডাকাত আলমকে পানি থেকে তোলার চেষ্টা করে। পুলিশ ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে পুলিশের দুই কনস্টেবল পুকুরে নেমে আলমকে ধরে তুলে আনেন। আটক আলম ও পলাশের দেওয়া তথ্যমতে আরও দুজন সদস্য পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সাপাহার থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি তারেকুর রহমান। আহত দুই ডাকাত সদস্যকে চিকিৎসার জন্য পুলিশের হেফাজতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।