বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির (বিআরপিওডব্লিউএ) প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, পুলিশের প্রথম ও প্রধান কাজ হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষা তথা জনগণের সেবক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করা। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে বিআরপিওডব্লিউএর ৪০তম বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওয়ালিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে সভায় কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সমিতির মহাসচিব ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিয়া লুৎফর রহমান চৌধুরী। বার্ষিক বাজেট উপস্থাপন করেন কোষাধ্যক্ষ মো. বক্তিয়ার হোসেন ভূঞা পিপিএম এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নাজমুল হক পিপিএম।
আইজিপি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ অতীতে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে। বাংলাদেশ পুলিশ আগামীতেও দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পুলিশকে একটি পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের অনন্য অবদানের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আপনাদের দেখানো পথ ধরেই বাংলাদেশ পুলিশ দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে তাদের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
আইজিপি বলেন, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যাঁরা বাংলাদেশ পুলিশের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। আপনাদের রচিত ভিতের ওপরই বর্তমান পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। আপনাদের কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকাকে আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, নতুন প্রজন্মের পুলিশ কর্মকর্তাগণ আপনাদের কাছ থেকে উপদেশ ও নির্দেশনা গ্রহণ করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনে সচেষ্ট হবেন।
পুলিশপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি একটি কল্যাণধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপরিচিত। ৪০ বছর ধরে এ সমিতি মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।
আইজিপি বলেন, অবসর গ্রহণের পরও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাগণ বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। বিশেষ করে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি সমিতির সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সমিতির মৃত্যুবরণকারী সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করেন পুলিশপ্রধান।
আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশেরও প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটিত হচ্ছে। এতে পুলিশের কাজেও ব্যাপক গতিশীলতা এসেছে।
সভায় সমিতির পাঁচজন বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। কমিউনিটি পুলিশিং ও সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে বিশেষ অবদানের জন্য বাগেরহাটের রামপাল থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) এস এম আশরাফুল আলম, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) কাউনিয়া থানার এসআই মো. সাইফুল ইসলাম এবং কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার এসআই (নিরস্ত্র) তহুরা আক্তারকে এস এম আহসান স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়।
এ ছাড়া পুলিশ পরিবারের সন্তানদের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জনকারী ২৯ জন্য মেধাবী শিক্ষার্থীকে সমিতি পরিচালিত ‘মরহুম মহীউদ্দিন আহমদ চৌধুরী-এম সহীদুল ইসলাম চৌধুরী’ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।