রাজশাহী নগরে ১০ বছরের কম বয়সী ৩০ জন স্কুলছাত্রকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগে মো. আব্দুল ওয়াকেল (৩৩) নামের এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে একটি ফোন, দুটি হার্ডডিস্ক ও দুটি পেনড্রাইভ।
গত শনিবার (১৮ মে) রাজশাহী নগরীর মতিহার থানাধীন শ্যামপুর ডাঁশমারী এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি ওয়াকেল রাজশাহীর কাটাখালী এলাকার আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষক।
সিআইডি জানায়, ওই শিক্ষক যৌন নিপীড়নের ভিডিও ধারণ করে নিজের মুঠোফোন, পেনড্রাইভ, কম্পিউটার ও হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করেন। সার্চ ইঞ্জিন এসব তথ্য পৌঁছে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়েটেড চিলড্রেন (এনসিএমইসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। বাংলাদেশে এই প্রতিষ্ঠানের সহযোগী হিসেবে কাজ করে সিআইডি। তাই এনসিএমইসি এসব ভিডিওকে ‘চাইল্ড অ্যাবিউজড’ কনটেন্ট হিসেবে সিআইডিকে পাঠায়। এ তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। তদন্তকালে সিআইডি ভুক্তভোগী কয়েকজন ছাত্র ও তাদের অভিভাবকের কাছ থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকের তথ্য সংগ্রহ করে। পরে শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সিআইডি জানায়, ওয়াকেল রাজশাহীর কাটাখালীর আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষক। ছাত্রাবস্থায় টিচ-ইন নামের একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করতেন তিনি। তখন থেকেই কোচিংয়ের ছাত্রদের টার্গেট করে চকলেট ও মোবাইলে গেমস খেলার প্রলোভন দেখিয়ে সখ্য গড়ে তুলতেন। পরে তাদের কখনো কোচিং সেন্টার, কখনো নিজের বাড়ি, আবার কখনো আশপাশের আমবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করতেন। আর এসব যৌনাচারের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখতেন।
সিআইডি আরও জানায়, স্নাতকে পড়ার সময় শিশুদের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করতেন ওয়াকেল। এটি তাঁর নেশায় পরিণত হয়। এ কারণে শিশুদের নিয়ে কোচিং সেন্টার চালু করেন। এ পর্যন্ত ৩০ জন ছাত্রকে ধর্ষণ করেছেন ওয়াকেল। তাঁর ফোন, পেনড্রাইভ ও কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রদের নগ্ন ছবি, ভিডিও এবং চাইল্ড পর্নোগ্রাফির কনটেন্ট পাওয়া গেছে।
এরই মধ্যে ওয়াকেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন রাজশাহীর কাটাখালীর আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক। আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন সিআইডি।