রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে ২২ জানুয়ারি পাওয়া যায় মাছ ব্যবসায়ী মহির উদ্দিনের লাশ। এ ঘটনার চারদিনের মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। আর এ জন্য যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিলাল আল আজাদকে কখনো লেগুনার যাত্রী, আবার কখনো লেগুনার চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতে হয়েছে। তিনি মূলত খুঁজছিলেন লাল রঙের পাদানিওয়ালা একটি লেগুনা, যার সূত্র ধরে উদঘাটন হতে পারে হত্যার রহস্য। খবর প্রথম আলোর।
পুলিশ জানায়, মহির উদ্দিন হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে লাশ উদ্ধারের পরদিন ২৩ জানুয়ারি থেকে এসআই বিলাল শুরু করেন লেগুনাচালকের সহকারীর কাজ। টানা তিনদিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড, কোনাবাড়ী, ডেমরা, চিটাগাং রোড ও নারায়ণগঞ্জ রুটে কাজ করেছেন তিনি। পরে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লেগুনা কদমতলীর পাটের বাগ এলাকার একটি গ্যারেজে সন্ধান পান।
মূলত এই লেগুনার সূত্র ধরেই উদ্ঘাটন হয় খুনের রহস্য। গ্রেপ্তার করা হয় ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল, মো. রিপন, মো. মঞ্জুর ও আবদুর রহমান।
পুলিশ জানায়, সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেলে, চলন্ত একটি লেগুনা থেকে কেউ মহির উদ্দিনকে ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু ফুটেজে লেগুনাটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখা যাচ্ছিল না। শুধু বোঝা গেছে, লেগুনার পাদানিতে লাল রং ছিল। লেগুনাস্ট্যান্ডের পূর্বপরিচিত এক লাইনম্যানের মাধ্যমে সাইনবোর্ডে গিয়ে নিজের পরিচয় গোপন রেখে চালকের সহকারীর চাকরি নেন এসআই বিলাল।
লেগুনা উদ্ধারের পর দুজনের নাম পাওয়া যায়। একপর্যায়ে জানা যায়, লেগুনার চালক মঞ্জুরের সহকারী বাসে কাজ করেন। চালকের সহকারীকে আটক করা গেলেও মঞ্জুরকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। স্থানীয় লোকজন জানান, মঞ্জুর ছুটিতে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে গেছেন। রাতেই মঞ্জুরের গ্রামের বাড়ি যায় পুলিশ। সেখানে জানা যায়, তিনি অন্য মঞ্জুর। এরপর ঢাকায় খোঁজাখুঁজি করে ২৬ জানুয়ারি রাতে সাইনবোর্ড স্ট্যান্ডে কাকতালীয়ভাবে পাওয়া যায় মঞ্জুরকে। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় রিপন আর রুবেলকে।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, যাত্রী মহির উদ্দিন সাদ্দাম মার্কেট এলাকা থেকে লেগুনায় ওঠেন। লেগুনা ফ্লাইওভার উঠলে ওই চার ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে প্রায় ৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাঁকে চলন্ত গাড়ি থেকে ছুড়ে ফেলে। গুরুতর আহত হয়ে তিনি মারা যান।