ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, কোরবানির পশু পরিবহনে রাস্তাঘাটে কোথাও কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না। তিনি এ ক্ষেত্রে সজাগ ও সতর্ক থাকার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি কোরবানির পশুর হাট পরিদর্শনের জন্যও পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।
আইজিপি আজ বুধবার (৬ জুলাই) বিকেলে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে দুই দিনব্যাপী (৫ ও ৬ জুলাই) ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভার শেষ দিনে সভাপতির বক্তব্যে এ নির্দেশনা দেন।
আইজিপি বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোরবানির পশুবাহী যানবাহন থামানো বা চেক করা যাবে না।
পশুর হাটে পোশাকে ও সাদাপোশাকে পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দেন আইজিপি।
আইজিপি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে হবে। মহাসড়কে করিমন, নছিমন, ভটভটি ইত্যাদি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। দূরবর্তী স্থানে মোটরসাইকেল চলাচলের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
পুলিশ প্রধান বলেন, মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে তদারকি বাড়াতে হবে। মামলা তদন্ত দ্রুততম সময়ে শেষ করতে হবে। তদন্তের মান বাড়াতে হবে। নিবিড় তদারকির মাধ্যমে মামলা তদন্তের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
আইজিপি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশের অব্যবহৃত জমিতে ফসল উৎপাদন এবং জলাশয়ে মাছ চাষ করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিগণ, সকল রেঞ্জের ডিআইজিগণ, মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারগণ, জেলার পুলিশ সুপারগণসহ অন্যান্য ইউনিটের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভার প্রথম দিন (৫ জুলাই) অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এম খুরশীদ হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেন। পরে ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) এ ওয়াই এম বেলালুর রহমান এপ্রিল-জুন ২০২২ কোয়ার্টারের খুন, ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, ছিনতাইসহ সামগ্রিক অপরাধের চিত্র তুলে ধরেন। পরে পুলিশ কর্মকর্তাগণ অপরাধের গতিপ্রকৃতি নিয়ে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন।
সভায় জানানো হয়, এপ্রিল-জুন ২০২২ সময়ে জানুয়ারি-মার্চ ২০২১ সময়ের তুলনায় ডাকাতি মামলা হ্রাস পেয়েছে। আবার এপ্রিল-জুন ২০২২ সময়ে এপ্রিল-জুন ২০২১ সময়ের তুলনায় খুন, ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা হ্রাস পেয়েছে।
সভায় কোরবানির পশু পরিবহন ও পশুর হাটের নিরাপত্তা; শপিং মল, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা; বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেলস্টেশনের নিরাপত্তা; ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং বন্যাকবলিত এলাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
দ্বিতীয় দিনে পুলিশের সকল ইউনিটের সঙ্গে সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থার ওপর প্রেজেন্টেশন দেন টেলিকম অ্যান্ড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট (টিঅ্যান্ডআইএম) ইউনিটের ডিআইজি এ কে এম শহীদুর রহমান। উল্লেখ্য, পুলিশ সদস্যগণ সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থার মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকে কাঙ্ক্ষিত স্থানে যোগাযোগ করতে পারবেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মোহম্মদ আলী মিয়া ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রমের ওপর একটি প্রেজেন্টেশন দেন।
সভায় অতিরিক্ত আইজি (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজি, এসবি মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজি, সিআইডি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজি (লজিস্টিকস অ্যান্ড অ্যাসেট অ্যাকুইজিশন) এস এম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজি (ডেভেলপমেন্ট) মো. আতিকুল ইসলাম, নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মো. শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল (অতিরিক্ত আইজি) আবু হাসান মোহম্মদ তারিক, এপিবিএনের অতিরিক্ত আইজি ড. হাসান উল হায়দার, অতিরিক্ত আইজি (অডিট অ্যান্ড ইন্সপেকশন) ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ, অতিরিক্ত আইজি (ফিন্যান্স) মো. শাহাবুদ্দীন খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।