
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, র্যাব, পুলিশের বিশেষায়িত অন্যান্য ইউনিট একযোগে কাজ করছে। পুলিশের সঙ্গে প্রশাসন, পরিবহনমালিক-শ্রমিকেরাও কাজ করছেন।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে গাবতলী বাস টার্মিনাল ও গরুর হাটের সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) উপস্থিত ছিলেন।
দেশবাসীকে আসন্ন ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে আইজিপি বলেন, প্রতিবারের মতো ঈদের জামাত, গরুর হাট, রেল, সড়ক, নৌপথে আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিবেচনায় রেখে নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ঘরমুখী মানুষ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন, অনেকে রওনা হচ্ছেন। তাঁরা যাতে স্বস্তিতে ও নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে পারেন, সে জন্য বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট একযোগে কাজ করছে।
তিনি বলেন, রমজানে ঘরমুখী মানুষের নিরাপত্তা দিতে হয়, কিন্তু এই ঈদে মানুষসহ পশুবাহী গাড়িও সামাল দিতে হয় পুলিশকে। এসব বিষয়ে বিবেচনা রেখেই আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হয়েছে। কোরবানির পশুবাহী গাড়ি যাতে যথাযথ স্থানে নিরাপদে যেতে পারে, এ জন্য রাস্তায় পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা রয়েছে। পশুবাহী গাড়ি কোনো অভিযোগ ছাড়া কেউ কোথাও থামাতে পারবে না, পুলিশের সব ইউনিট এ বিষয়ে সতর্ক আছে।
ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন এবং বড় অঙ্কের অর্থ পরিবহনের ক্ষেত্রে পুলিশের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেন আইজিপি। জাল টাকার বিষয়ে তিনি সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান। অজ্ঞান বা মলম পার্টি, অতিরিক্ত হাসিল আদায়কারী অথবা চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন আইজিপি। কেউ হয়রানির শিকার হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশকে জানাতে অথবা প্রয়োজনে ৯৯৯-এ ফোন করলে দ্রুততম সময়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছে যাবে বলেও জানান তিনি।
আইজিপি বলেন, মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ভটভটি বা ফিটনেসবিহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চলাচল করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ড্রাইভারদের অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি না চালানোর অনুরোধ করেন আইজিপি। একই সঙ্গে স্পিডগান দিয়ে হাইওয়ে পুলিশ গাড়ির গতি পরীক্ষা করবে বলে জানান তিনি।
যাত্রীদের উদ্দেশে পুলিশপ্রধান বলেন, জীবনের মূল্য অনেক বেশি। যাত্রী হয়ে পণ্যবাহী পরিবহনে উঠবেন না। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। পশুসহ মানুষের জীবনহানির সংশয় থাকায় ট্রাক বা ট্রলারে অতিরিক্ত পশু বহন না করার অনুরোধ জানান আইজিপি।
নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, ঈদের ছুটিতে বাসা ফাঁকা রেখে যাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন। বাসার সিসিটিভি সচল রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করুন। কারও কোনো সমস্যা হলে দ্রুত নিকটস্থ থানা বা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করার অনুরোধ রইল।
আইজিপি বলেন, পুলিশের সদস্যরা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। ঈদে নিজেরা ছুটিতে না গিয়ে দেশবাসী যাতে নিরাপদ-নির্বিঘ্নে ঈদ উপযাপন করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে কাজ করছে পুলিশ। জনগণকে সেবা দিয়ে পুলিশ সদস্যরা গর্ব ও আনন্দ অনুভব করে। পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের কাছে না গেলেও দেশবাসী উৎসব ও আনন্দমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করছে দেখে পুলিশ স্বস্তি অনুভব করে।
এ সময় বাংলাদেশ পুলিশ ও ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন পরিবহনমালিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও পশুর হাটের ইজারাদারেরা উপস্থিত ছিলেন।