পেনিতেনসিয়ারিয়া দেল লিতোরাল কারাগারে ভয়াবহ সংঘর্ষের পর গুয়াইয়াকিলে আরেকটি কারাগারের বন্দিরা ‘আমরা শান্তি চাই’, ‘আইন আমাদের হত্যা করছে’ লেখা ব্যানার প্রদর্শন করেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইকুয়েডরের গুয়াইয়াকিল শহরের পেনিতেনসিয়ারিয়া দেল লিতোরাল কারাগারে সংঘের্ষ কমপক্ষে ৬৮ জন নিহত হয়েছেন।
সহিংসতার এ ঘটনা অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঘটে।

দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গুয়াইয়াকিলের এ কারাগারে গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে আরেকটি সংঘর্ষে ১১৯ জন বন্দি নিহত হয়েছিলেন, যা এ পর্যন্ত দেশটিতে ঘটা সবচেয়ে ভয়াবহ কারাদাঙ্গা। এই সহিংসতার জন্য কারাগারটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মাদক পাচারকারী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চলা বিরোধকে দায়ী করেছিল দেশটির সরকার। খবর রয়টার্সের।

গুয়াইয়াস প্রদেশের গভর্নর পাবলো আরোসেমেনা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এক অপরাধী গোষ্ঠীর প্রধানের মুক্তির পর সৃষ্ট শূন্যতা পূরণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এবারের ঘটনাটি ঘটেছে।

পাবলো আরোসেমেনা বলেন, ‘কয়েক দিন আগে সাজার মেয়াদের ৬০ শতাংশ পূর্ণ হওয়ার পর কারাগারের এই ব্লক নিয়ন্ত্রণকারী অপরাধী দলটির নেতা মুক্তি পান, তারপর থেকে সেখানে কোনো নেতা ছিলেন না।’ তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে তাঁদের পরাস্ত করার চেষ্টা করে অন্য ব্লকগুলো নিয়ন্ত্রণকারী অন্যান্য দল, তারা সেখানে প্রবেশ করার পর ব্লকটি পুরোপুরি রণক্ষেত্র হয়ে যায়।’

রাতভর চলা এ সংঘর্ষের কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে এসেছে। ভেতরে থাকা বন্দিরাই এসব পোস্ট করেছেন বলে ধারণা। এসব ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্দিরা সহিংসতা থামানোর জন্য সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন আর তাঁদের পেছনে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
তবে এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
দক্ষিণ আমেরিকার এ দেশটির কারাগারগুলোতে প্রায় ৩৯ হাজার বন্দি আছেন। এসব কারাগারে প্রায়ই দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ইকুয়েডরের আরেকটি কারাগারে দাঙ্গায় ৭৯ জন এবং জুলাইতে আরেকটিতে ২২ জন নিহত হয়েছিলেন।

সেপ্টেম্বরে পেনিতেনসিয়ারিয়া দেল লিতোরাল কারাগারে ভয়াবহ ওই দাঙ্গার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট গিয়ারমো লাসো দেশজুড়ে কারাগারগুলোতে ৬০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। তখন কারাগারগুলো সম্প্রসারণের জন্য তহবিল ছাড় এবং সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য সামরিক বাহিনীর সহায়তার অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল।

জরুরি অবস্থা জারির পর থেকে পুলিশি অভিযানে পেনিতেনসিয়ারিয়া দেল লিতোরালসহ বিভিন্ন কারাগার থেকে বন্দুক, গ্রেনেড, ছুরি, যুদ্ধোপকরণ, মোবাইল ফোন ও মাদক উদ্ধার করা হয়।